৩৯১
(স্বামী ব্রহ্মানন্দকে লিখিত)

খেতড়ি
৮ ডিসেম্বর, ১৮৯৭

অভিন্নহৃদয়েষু,

আমরা কাল খেতড়ি যাত্রা করিব। দেখিতে দেখিতে লটবহর অত্যন্ত বাড়িয়া উঠিয়াছে। খেতড়ি হইয়া সকলকেই মঠে পাইবার সঙ্কল্প আছে। যে-সকল কাজ এদের দ্বারা হইবে বলে মনে করেছিলাম, তাহার কিছুই হইল না। অর্থাৎ আমার সঙ্গে সঙ্গে থাকিলে কেহই যে কিছু করতে পারিবে না — তাহা নিশ্চিত। স্বাধীনভাবে না ঘুরিলে ইহাদের দ্বারা কিছুই হইবে না। অর্থাৎ আমার সঙ্গে থাকিলে কে ইহাদের পুঁছিবে — কেবল সময় নষ্ট। এইজন্য ইহাদের পাঠাইতেছি মঠে।

Famine (দুর্ভিক্ষ) ফণ্ডে যে টাকা বাঁচিয়াছে, তাহা একটা permanent work (স্থায়ী কার্যের) ফণ্ড করিয়া রাখিয়া দিবে। অন্য কোন বিষয়ে তাহা খরচ করিবে না এবং সমস্ত famine work (দুর্ভিক্ষ-কার্য)-এর হিসাব দেখাইয়া লিখিবে যে, বাকী এত আছে অন্য good work (ভাল কাজের )-এর জন্য। …

কাজ আমি চাই — don’t want any humbug (কোন প্রতারক চাই না)। যাদের কাজ করবার ইচ্ছা নেই — ‘যাদু, এই বেলা পথ দেখ’ তারা। খেতড়ি পৌঁছিয়াই তোমার power of attorney (ক্ষমতাপত্র)-তে সহি করিয়া পাঠাইয়া দিব — যদি পৌঁছাইয়া থাকে। আমেরিকান বস্টন ছাপওয়ালা চিঠিমাত্রই খুলিবে, অন্য কোন চিঠি খুলিবে না। আমার চিঠিপত্র খেতড়িতে পাঠাইবে। টাকা আমি রাজপুতানাতেই পাইব, তাহার কোন চিন্তা নাই। তোমরা প্রাণপণে জায়গাটা ঠিক কর — এবার নিজের জমির উপর মহোৎসব করিতেই হইবে।

টাকাটা কি বেঙ্গল ব্যাঙ্কে আছে অথবা তুমি অন্য কোথাও রাখিয়া দিয়াছ? টাকাকড়ি সম্বন্ধে বিশেষ সাবধান হইবে। হিসাব তন্ন তন্ন রাখিবে ও টাকার জন্য আপনার বাপকেও বিশ্বাস নাই জানিবে। ইতি

সকলকে ভালবাসা জানাইও। হরি কেমন আছে লিখিবে। মধ্যে দেরাদুনে উদাসী সাধু কল্যাণদেব ও আরও দু এক জনের সহিত সাক্ষাৎ। হৃষীকেশওয়ালারা আমাকে দেখিবার জন্য বড়ই উৎসুক— ‘নারায়ণ হরি’র কথা পুনঃ পুনঃ জিজ্ঞাসা ইত্যাদি।

বিবেকানন্দ


উত্তরপ্রাপ্তির জন্য খেতড়ির ঠিকানা